নামে বেনামে শতকোটি টাকার সম্পদ
ধরাছোঁয়ার বাহিরে রাজাপুর বিএনপির বহিস্কৃত নেতা নাসিম উদ্দিন আকন
নিজেস্ব প্রতিবেদক
আপলোড সময় :
২৫-০১-২০২৫ ১০:০৯:০৩ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২৫-০১-২০২৫ ১০:০৯:০৩ অপরাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধি:
দলের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি সহ অপকর্ম করাই তার নেশা,গড়েছেন নিজের এলাকা ছাড়াও রাজধানী ঢাকায় নামে বেনামে শত কোটি টাকার সম্পদ,এতদিন এলাকার মানুষ ভয়ে মুখ না খুললেও এবার জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যের কাছে চাঁদা চাওয়ার কারনে খোদ দলের পক্ষ থেকে শোকজ সহ বহিস্কার হয়েছেন এই নেতা।
বলছি ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার সম্প্রতি বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক নাসিম উদ্দিন আকনের কথা,যার বিরুদ্ধে দলের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করা ও চাঁদাবাজির অভিযোগ সহ দলের দুর্দিনে আওয়ামীলীগের নেতাদের সাথে সখ্যতা রেখে নিজ দলের ক্ষতি করার ও অভিযোগ উঠেছে।
সর্বশেষ গত ২৫শে জানুয়ারী ঝালকাঠি জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বলা হয় ঝালকাঠি জেলা বিএনপির অধীন রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক মোঃ নাসিম উদ্দিন আকনের দলীয় পদ ২৫/১/২০২৫ইং হইতে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। সাথে সাথে তাকে দলীয় সকল কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া দলের সকল ধরনের নেতাকর্মীদের কে রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক( দলীয় পদ স্থগিত) সাথে কোনো প্রকার যোগাযোগ রক্ষা না করার নির্দেশনা ও দেয়া হয় ঐ বিজ্ঞপ্তিতে।
এর আগে নাগরিক কমিটির সদস্যের কাছে চাঁদা দাবি করার কারনে তাকে শোকজ সহ তিনদিনের মধ্যে কারন দর্শানোর নোটিশ দেয় জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে,যা বিভিন্ন জাতীয় প্রত্রিকায় ও নিউজ আকারে প্রকাশিত হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় অত্যান্ত সাধারণ পরিবার থেকে উঠে আসা নাসিম উদ্দিন আকন এক সময় ছিলেন একজন সাধারন আখ বিক্রেতা, পরবর্তীতে দলীয় নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি ও ঠিকাদারির মাধ্যমে বর্তমানে রাজাপুরে একক আধিপত্য বিস্তার করেছে। এছাড়া গনঅভ্যুত্থানেের পর তিনি নিজের কর্তৃত্বে নিয়ে আসেন পুরো উপজেলা। ঠিকাদারি,দখল,চাঁদাবাজি সবই চলে তার কথামতো,কেউ বাঁধা হয়ে দাঁড়ালে পড়তে হয় তার বাহিনীর মুখে।
জানা যায় ৫ই আগস্টের পর আওয়ামী লীগের নেতাদের টাকার বিনিময়ে পুনর্বাসন সহ অন্তত ৩৫ কোটি টাকার সরকারি কাজ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
অভিযোগ রয়েছে দলীয় নেতাকর্মী দের জিম্মি করে একছত্র আধিপত্য কায়েম করেছে এই বহিস্কৃত নেতা,
তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গেলেই মামলা সহ দল থেকে বহিষ্কারের ঘটনা রয়েছে বলে জানা যায়, এছাড়া সাধারণ নেতাকর্মী দের উপর নির্যাতনের ও অভিযোগ উঠেছে এই নেতার বিরুদ্ধে, স্থানীয় ভুক্তভোগীরা তার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে বলে ও জানা যায়।
নাসিম উদ্দিন আকনের রাজাপুর উপজেলায় ৫০ একর জায়গার উপর ইটের ভাটা ও বাড়ি ,দোকান মিলিয়ে ২০টি ভবন রয়েছে,এছাড়া বরিশালের বটতলা এলাকায় পাঁচ তলা একটি ভবন ও খুলনায় একটি ফ্লাট রয়েছে।
এখানে শেষ নয় ঢাকার মিরপুর মাজার রোডে দশ শতাংশ জমির উপর ছয় তলা একটি ভবন সহ নামে বেনামে শত কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন এই নেতা।
জানতে চাইলে রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বিএনপির সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জাকারিয়া সুমন বলেন, চাঁদাবাজির অভিযোগে নাসিম উদ্দিন আকনকে বহিষ্কার করা হয়েছে,ঘটনাটি সত্য ও অত্যান্ত দুঃখজনক। তার কাছ থেকে এমনটা আশা করিনি, আমার মতে সে অভিযোগ গুলো প্রমান করুক।
চাঁদাবাজি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাজাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: ইসমাইল হোসেন মুঠোফোনে বলেন,চাঁদাবাজির বিষয়ে এখনো কোনো মামলা হয়নি,এছাড়া পূর্বের মামলা আছে কিনা আমার জানা নাই।
এ বিষয়ে নাসিম উদ্দিন আকন বলেন, আমার বিরুদ্ধে দল থেকে শোকজ নোটিশ তারা দিতেই পারে। আমিও তার উপযুক্ত জবাব দেব। তবে আমার বিরুদ্ধে যে চাঁদাবাজির অভিযোগ দেওয়া হয়েছে তা মোটেও সত্যি নয়। আমার সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে। তারা এই অপপ্রচার চালাচ্ছে।’
নিউজটি আপডেট করেছেন : SM Sohel
কমেন্ট বক্স